Rishabh Pant মৃত্যুকে মুখোমুখি দেখে ফিরে এসেছেন—তাই কষ্টের মানে তিনি খুব ভালো করেই জানেন।
Rishabh Pant ব্যথার সঙ্গে লড়াই: ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে অনিশ্চিত উপস্থিতি ভারতের বড় ধাক্কা

Rishabh Pant মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও ফিরে এসেছেন, তাই ব্যথা সম্পর্কে তাঁর অভিজ্ঞতা নতুন নয়। ক্রিকেট মাঠে তাঁকে যন্ত্রণায় দেখা অস্বাভাবিক কিছু নয়। মাত্র দুই সপ্তাহ আগে, লর্ডস টেস্টের প্রথম দিনে জসপ্রীত বুমরার একটি বিপজ্জনক সুইং করা ডেলিভারি গ্লাভসবন্দি করতে গিয়ে বাম হাতের তর্জনী আঙুলে মারাত্মক চোট পান তিনি। সেই চোটের ফলে ম্যাচের বাকি অংশে তিনি আর উইকেটকিপিং করতে পারেননি।
ভারতীয় দলের পরিকল্পনায় Rishabh Pant গুরুত্ব নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তিনি কেবল কিপার হিসেবেই নয়, মাঠে ফিল্ড সেটিং ও ডিআরএস সিদ্ধান্তে শুবমন গিলের নির্ভরযোগ্য সহায়ক। তার চেয়েও বেশি, ভারত তার ব্যাটিং স্টাইলের জন্য পন্থকে ভালোবাসে—যা একাধারে নিয়ন্ত্রিত বিশৃঙ্খলা ও পরিমিত উন্মাদনা। কখনও কখনও তিনি নিজের দলের জন্য যেমন হুমকি, তেমনি প্রতিপক্ষের জন্যও বিপজ্জনক। তবু ভারত তাঁকে হারাতে চায় না কোনও মূল্যে।
কিন্তু এখন বাস্তবতা বলছে, ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে Rishabh Pant ছাড়াই মাঠে নামতে হতে পারে ভারতকে। বুধবার ক্রিস ওকসকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে পন্থ বলটা নিজের পায়ে লাগান—ডান পায়ের বুড়ো আঙুলের নিচের অরক্ষিত অংশে। সঙ্গে সঙ্গেই প্রবল যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যান তিনি। ফিজিও দ্রুত ছুটে আসেন, এবং স্পষ্ট হয়ে যায় যে এটি সাধারণ চোট নয়। ডান পায়ের বুট খুলতেই দেখা যায়, টেবিল টেনিস বলের আকারের ফোলা আর রক্ত।
তিনি নিজের ইনিংস চালিয়ে যেতে পারেননি। উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও ডান পায়ে ভর দিতে না পেরে তাঁকে বাগি করে মাঠ ছাড়াতে হয়। তাঁর মুখ ছিল যন্ত্রণায় বিকৃত। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় স্ক্যানের জন্য, যা চোটের প্রকৃতি নিশ্চিত করবে।
এই চোট ভারতের জন্য কতটা বড় ধাক্কা হবে, বিশেষ করে সিরিজে ১-২ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় যেখানে ভারত সমতা ফেরাতে মরিয়া, সেটাই এখন দেখার বিষয়। আগামী সপ্তাহে ওভালে সিরিজ শেষ হলেও, তার আগে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে পন্থের উপস্থিতি না থাকাটা ভারতের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ।
Rishabh Pant অনুপস্থিতি: ভারতের ব্যাটিং শক্তির বড় ক্ষতি

যদি পন্থ এই ম্যাচে আর ব্যাট করতে না পারেন, তবে ভারতের পক্ষে একজন বিকল্প উইকেটকিপার নেওয়ার অনুমতি থাকবে—যেমন লর্ডসে ধ্রুব জুরেল এসেছিলেন। কিন্তু তাতে ভারতের ব্যাটিং লাইন-আপের সবচেয়ে প্রভাবশালী শক্তি হারিয়ে যাবে। পন্থ অনেকবারই দেখিয়েছেন যে তিনি কতটা অপ্রত্যাশিত এবং বিস্ময়কর কিছু করতে পারেন। গত আট বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি এই ধরনের বিস্ময়কর মুহূর্তের উদাহরণ তৈরি করেছেন। এবং বিপক্ষ দলের জন্য ভয়ের বিষয় হলো—যা বাকিদের কাছে অদ্ভুত, তা পন্থের কাছে স্বাভাবিক।
এই সফরে, শুভমান গিলের সহ-অধিনায়ক হিসেবে ২৭ বছর বয়সি পন্থ আগের চেয়ে অনেক বেশি সংযতভাবে খেলেছেন, যা তাঁকে আরও বিপজ্জনক করে তুলেছে। যদিও বুধবারের রিভার্স সুইপ তাকে বিপদে ফেলেছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি বেশ বিচক্ষণতার সঙ্গে মুহূর্ত বেছে নিয়েছেন—সঠিক বল ও বোলার টার্গেট করেছেন, এবং কখন নিজের আগ্রাসী রূপ বের করে আনবেন, তা জেনে গেছেন। এর ফল—তিন টেস্ট ও এক ইনিংসে ৪৬২ রান, স্ট্রাইক রেট ৭৮.৩০; পুরো সিরিজে শুধু গিলই (৬১৯ রান) তাঁর চেয়ে এগিয়ে। চাপকে চাপহীনতায় রূপান্তরিত করার ও ম্যাচের গতি ঘোরানোর দক্ষতায় পন্থের জুড়ি মেলা ভার।
যদি পন্থ টেস্ট থেকে ছিটকে যান, ভারত তাকে কতটা মিস করবে? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য রকেট সায়েন্সের প্রয়োজন নেই। দু’গতির এবং অসমান বাউন্সের এই পিচে সিরিজ সমতায় ফেরার পথে এটি দলের সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে। যদিও ভারতের ব্যাটিং গভীরতা এই ঘাটতি পুষিয়ে দিতে সক্ষম। পন্থ বহুবার তাঁর সাহস, দৃঢ়তা ও মানসিক শক্তির উদাহরণ স্থাপন করেছেন, যা প্রায় অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। যদি সামান্যতম সম্ভাবনাও থাকে যে তিনি নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবেন, তিনি মাঠে ফিরবেন। আর যদি না পারেন, তাহলে ড্রেসিংরুমে বসেই মাঠে থাকা সতীর্থদের সঙ্গে মনেপ্রাণে থাকবেন। যদিও সেটা উইকেটের পেছনে তাঁর চেনা চঞ্চল কণ্ঠস্বরের বিকল্প হতে পারে না—নিশ্চয়ই নয়।